কেশরাজ

কেশ মানে চুল, রাজ অর্থ রাজা। তৃণ জাতীয় এই উদ্ভিদের সাথে মাথা ও চুলের সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। এর বৈজ্ঞানিক নাম Eclipta prostrate.

এর পাতা, কাণ্ড এমনকি সম্পূর্ণ উদ্ভিদ চুলের যত্নে ব্যবহৃত হয়। এরা সাধারণত ৫০-৬০ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। বাংলাদেশের সর্বত্রই একে দেখতে পাওয়া যায়। সাধারণত জলাশয়ের ধারে বা জলযুক্ত ভূমির নিকটবর্তী এরা ভাল জন্মে। পাতা ৫-৬ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। পাতা লম্বাটে ও ফুল বৃত্তাকার।পুরো উদ্ভিদের রঙ সবুজ; কিন্তু ফুলের রঙ সাদা। প্রত্যেকটি ডালের অগ্রভাগে ফুল ফোটে। ফুল পরিপক্ক হয়ে বীজ পড়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই নতুন গাছ জন্মে।

এর রস তেলের সাথে মিশ্রিত করে মাথায় মাখলে চুল পড়া বন্ধ করে, চুল ঘন ও কালো করে। এমনকি মাথাব্যথাতেও এর রস উপকারি। সেকারণে আমাদের দেশের বেশিরভাগ মাথার তেলের বিজ্ঞাপনে কেশরাজের গুণাগুণকে ফলাও করে প্রচার করা হয়। নিরাপদ কীটনাশক হিসেবেও বর্তমানে কেশরাজ আলোচনায় এসেছে। মশার লার্ভা নিয়ন্ত্রণে কেশরাজ ভূমিকা রাখতে পারে। এমনকি এর রস পানিতে মিশিয়ে ঘরে স্প্রে করে মশা বিতাড়ণ করা সম্ভব। শরীরের কেটে যাওয়া অংশে কেশরাজের পাতা বেটে দিলে দ্রুত রক্ত বন্ধ হবে।

শুধু তাই নয়, ক্ষতস্থান দ্রুত শুকাতে কেশরাজ খুবই কার্যকরি। কেশরাজের রস মাথায় দিয়ে ঘণ্টাখানেক অপেক্ষার পর চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেললে উঁকুন থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। কীটনাশক হিসেবে কেশরাজকে কাজে লাগাতে পারলে বর্তমানে ব্যবহৃত ক্ষতিকারক রাসায়নিক থেকে পৃথিবী মুক্ত হতো। সেদিন হয়তো আর দূরে নয়, যেদিন মানুষ কীট তাড়াতে প্রাকৃতিক উপাদানের ওপর নির্ভর করবে।


লেখক : সঞ্জয় সরকার

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //